পটুয়াখালী পুলিশ লাইন্সের ব্যারাক থেকে গতকাল রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকালে তৃষ্ণা বিশ্বাস (২২) নামে এক নারী কনস্টেবলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার মৃত্যুর খবরে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসারে চলছে শোকের মাতম। মানসিক সমস্যার কারণে তৃষ্ণা আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি স্বজনদের।
তৃষ্ণা বিশ্বাস ডাসার উপজেলার পূর্ব কমলাপুর গ্রামের কৃষ্ণ বিশ্বাসের মেয়ে। তিনি পটুয়াখালী পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন। দুই ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। তার ১৪ বছর বয়সী কিশোর বিশ্বাস নামে ছোট এক ভাই রয়েছে।
সোমবার দুপুরে (২০ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ডাসার উপজেলার পূর্ব কমলাপুর গ্রামের তৃষ্ণা বিশ্বাস দিনমজুর বাবার সংসারের হাল ধরতে ২০২৩ সালের নভেম্বরে নারী কনস্টেবল পদে চাকরিতে যোগদান করেন। চাকরির কিছু দিন পর থেকে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। পরিবার থেকে মানসিক ডাক্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান স্বজনরা। কিন্তু গত রোববার সকালে পরিবারের কাছে খবর আসে পুলিশ ব্যারাকে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তৃষ্ণা। পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম মেয়েকে হারিয়ে পাগল তার বাবা-মা ।
এলাকাবাসীরা জানায়, তৃষ্ণা খুব ভালো মেয়ে ছিল। অনেক কষ্ট করে এই চাকরিটা পেয়েছিল। ওর চাকরির টাকায় সংসার চলতো।
নিহত তৃষ্ণা বিশ্বাসের বাবা কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, মেয়েটা মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। ডাক্তার দেখানোর জন্য কয়েকবার ছুটি চেয়েছে, কিন্তু দেয় নাই। তিন মাস আগে প্রেমের সূত্র ধরে পরিবারের সম্মতিতে ওর ব্যাচমেট পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কোর্ট ম্যারেজ করে। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এমন একটা ঘটনা ঘটাবে তা বুঝতে পারিনি। মেয়েটার আর সুখে সংসার করা হলো না।
তিনি আরও বলেন, আমি মরদেহটি আনতে গিয়েছিলাম। বাড়িতে এনে সৎকার কাজ কাজ সম্পন্ন করেছি।
নিহত পুলিশ সদস্যের মা বিনা বিশ্বাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মেয়েকে এক মাস আগে ঢাকা নিয়ে মানসিক ডাক্তার দেখাই। ওর মধ্যে একটা ভয় কাজ করতো। আমি ওর ছয় মাসের ছুটির জন্য অফিসে যাই। কিন্তু পুলিশ অফিসের স্যারেরা ছুটি দেননি। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
ডাসার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক বলেন, ডাসারের বাসিন্দা এক নারী পুলিশ কনস্টেবল মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালী জেলায়। মরদেহ সৎকারে পুলিশের সহযোগিতা দরকার হলে পুলিশ সহযোগিতা করবে।