Breaking News

যাকে নিজের সুপুরুষ নায়ক মনে করেন ঋতুপর্ণা

ওড়িয়া সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা উত্তম মহান্তি গত বৃহস্পতিবার রাতে গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুতে টালিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত শোকস্তব্ধ। কারণ তিনি কখনো অভিনেত্রীর নায়ক ছিলেন, আবার কখনো বাবা।

তার মৃত্যুতে শোকাহত ঋতুপর্ণা বলেন, বাংলায় যেমন উত্তমকুমারের জনপ্রিয়তা, ওড়িয়ায় সমান জনপ্রিয় উত্তম মহান্তি। যেমন সুপুরুষ তেমনই সুন্দর হাসি। আচার-আচরণেও তিনি উত্তম। তিনি বলেন, আমার অভিনয়ের প্রথম জীবনের নায়ক। ওর হাসিমুখ দেখলেই মন ভালো হয়ে যেত।

ওড়িয়ার এ খ্যাতনামা নায়কের সঙ্গে ঋতুপর্ণার অভিনয় জীবনের লম্বা সফর। এ বিষয়ে একটি গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, পাঁচটি ছবিতে সম্ভবত আমরা অভিনয় করেছিলাম। ওর জন্মস্থান বারিপদায় আমরা কত নাচের দৃশ্যের শুটিং করেছি। এত হিট সিনেমার নায়ক ছিলেন তিনি। কিন্তু কী মিষ্টি ব্যবহার। আমাকে উল্টে ডাকতেন ‘সুইট মেয়ে’ বলে।

ঋতুপর্ণা তখন সদ্য অভিনয় দুনিয়ায় এসেছেন। উত্তম তাকে দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন। সেটে বাকিদের বলেছিলেন— এই ছোট্ট, মিষ্টি মেয়েটা কে? তার পর থেকেই ওই বিশেষ নামে সম্বোধন করেন।

তিনি বলেন, উত্তম যেমন অনেক বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন, তেমনই আমিও ওর কয়েকটি ওড়িয়া ছবির নায়িকা। কিছু সিনেমায় আমাদের সঙ্গে মহাশ্বেতাদিও অভিনয় করেছিলেন। সেটে সবাই মিলে খুবই মজা করতাম।

পরে পরিচালক স্বপন সাহার একটি সিনেমায় তিনি নায়িকার বাবা। নায়িকা তখন লেক মার্কেটে থাকেন। বাংলা ছবিতে অভিনয়ের সময় উত্তম মহান্তি লেক মার্কেটের এক গেস্ট হাউসে প্রায়ই থাকতেন। সেই সময় ঋতুপর্ণার বাড়িতে যেতেন। খাওয়াদাওয়া, আড্ডায় দিনগুলো যেন পাখা মেলে উড়ে যেত। অভিনেত্রীর বাবাকে খুবই শ্রদ্ধা করতেন সদ্যপ্রয়াত অভিনেতা। তারপরও অনেক বার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে দুজনের। এখন সেসব স্মৃতি।

প্রয়াত অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ঋতুপর্ণার বলেন, উত্তমদা ওড়িয়া বিনোদন দুনিয়ায় এক আলাদা রোমান্টিক ঘরানা তৈরি করেছিলেন, যা আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে ওর রাজ্য। উত্তমদার ছেলে বাবুসানও নিজের প্রতিভায় খ্যাতনামা। আশা করি, আগামী দিনে বাবার ঐতিহ্য যথার্থভাবে বহন করে নিয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, ১৯৫৮ সালে বারিপদায় জন্ম উত্তম মোহান্তির। ওড়িয়া সিনেমার জগতে অতি জনপ্রিয় মুখ এ অভিনেতা। কর্মজীবনে ১৩০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৭৭ সালে সিনেদুনিয়ায় পথচলা শুরু হয় তার সাধু মেহের পরিচালিত ‘অভিমান’ ছবি দিয়ে। কয়েক দশকের ক্যারিয়ারে ওড়িয়ার পাশাপাশি বাংলা সিনেমাতেও নজর কাড়েন।

অন্তত ৩০টি বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। নয়া জাহির নামে একটি হিন্দি সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন অভিনেতা। ১৯৯৯ সালে জয়দেব পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় তাকে। ২০১২ সালে তিনি ওডিশা লিভিং লিজেন্ড অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন। ওড়িয়া সিনেমায় তার অবদানের জন্য একাধিকবার ওড়িশা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার পান অভিনেতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *