কখনো আট, কখনো সাত, আবার কখনো চার- এমনকি কখনো হয়ে ওঠেন ওপেনারও- জাতীয় দলে এভাবেই ব্যাটিংয়ে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলের প্রয়োজনে যখন যেভাবে বলা হয়েছে, সেভাবেই খেলেছেন তিনি। এজন্য ভক্তদের মজা করে বলতে শোনা যায়, আলু যেমন যে কোনো তরকারির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে, মিরাজও তেমন।
ভক্তদের কথা যে ভুল তাও নয়। কারণ, কোচ ও ম্যানেজমেন্টের কথায় বারবার ব্যাটিংঅর্ডার পরিবর্তন করলেও মিরাজ নিজের মতো খেলেছেন, পারফর্মও করেছেন। কখনো সফল হয়েছেন, কখনো বা হননি।
তবে আগামী দিনে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি চান না মিরাজ। এলোমেলো ব্যাটিংঅর্ডার নিয়ে সুরাহা করতে চান টাইগার অলরাউন্ডার। নির্দিষ্ট পজিশনে ব্যাটিং করতে চান তিনি।
সম্প্রতি ক্রিকেট-বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’-কে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মিরাজ। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ব্যাটিং পজিশন নির্দিষ্ট করে দিতে কোচ, ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেছেন। অর্থাৎ আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার বলি হতে চান না ডানহাতি অলরাউন্ডার।
এমনটি নির্দিষ্ট পজিশনে ব্যাটিং করালে আরও ভালো করতে পারবেন বলে মনে করেন মিরাজ। এমনটি দলের জন্যও সেটি ভালো হবে।
মিরাজ বলেন, ‘আমার মতো এত বেশি পজিশন পরিবর্তন করা হয়েছে এমন ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলে আছে বলে মনে করি না। আমার ওপর যত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে, তেমনটা খুব কম খেলোয়াড়ের সঙ্গেই হয়েছে। আপনি কি মনে করেন না যে, আমাকে একটি নির্দিষ্ট পজিশনে সেট করা উচিত? তাহলে আমি ভালো পারফর্ম করতে পারবো এবং দলও উপকৃত হবে।’
যেকোনো পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতাই আপনার এমন অবস্থান জন্য দায়ী কিনা- মিরাজের উত্তর, ‘আমি কখনো ‘না’ বলতে পারি না। এটিই আমার সমস্যা। আমি জানি না কেন এমন হয়। শুধু ক্রিকেট নয়, আমার ব্যক্তিগত জীবনেও একই অবস্থা। আমি ‘না’ বলতে পারি না।’
সামনে এলোমেলোভাবে ব্যাটিংয়ে না নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিরাজ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই তার এমন ভাবনার বাস্তবায়ন দেখা যেতে পারে।
মিরাজ বলেন, ‘এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। আমি ইতোমধ্যেই আমার কোচ, অধিনায়ক এবং (বিসিবি) সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি। আমি তাদের আমার মতামত জানিয়েছি। এখন তারা প্রতিক্রিয়া জানাবে অথবা এ বিষয়ে চিন্তা করবে।’
চার নম্বরে ব্যাটিং আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা? উত্তরে মিরাজ বলেন, ‘আমি ওই পজিশনে চারটি ইনিংস খেলেছি। যার মধ্যে তিনটিতে ৭০-এর বেশি রান করেছি। হ্যাঁ, মাঝে মাঝে ব্যর্থতা আসতে পারে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমি সেখানে ভালো করতে পারবো না। আমাকে যেখানে খেলতে বলা হয়েছে, আমি সেখানে পারফর্ম করে দেখিয়েছি। এখন আমি মনে করি একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। আমি ম্যানেজমেন্টকে বলেছি, সম্ভবত আমাকে একটি নির্দিষ্ট পজিশনে সেট করা ভালো হবে।’
মিরাজ চার নম্বরকে নিজের জন্য ভালো পজিশন মনে করেন। এই পজিশনে কীভাবে খেলতে হবে, সেটা ভালো জানেন।
মিরাজ বলেন, ‘যদি আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে আমি বলবো, হ্যাঁ, চার নম্বর পজিশন আমার জন্য ভালো হবে। কারণ এখানে আমি সময় পাবো। আমি জানি কীভাবে এই পজিশনে খেলতে হয়। মুশফিক ভাই (মুশফিকুর রহিম) আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন চার নম্বরে খেলেছেন। তিনি এই পজিশনে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার, গত সাত-আট বছরে প্রচুর রান করেছেন। আমি তার সঙ্গে আলোচনা করেছি কীভাবে এখানে খেলতে হয়। আমি মনে করি, আমি এই পজিশনের সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পেরেছি।’