আসিফ মাহমুদ, হাসনাত ও সারজিসের ফেসবুক আইডির কী হলো?
ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ফেসবুক আইডি। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, ঢাবি শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আরো অনেকের ফেসবুক আইডি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বুধবার বিকেল থেকে তাদের আইডিগুলো সার্স করে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই বলছিলেন, এই আইডিগুলো ডিজেবল হয়ে গেছে।
তবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক জানান, তাদের কারো আইডি ডিজেবল বা নষ্ট হয়নি। আইডিগুলোতে কিছু সমস্যা হচ্ছিল, তাই তারা আইডি ডিএক্টিভেট করে রেখেছেন।
তিনি আরো জানান, যারা এ ধরনের চেষ্টা করছে আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। তাদের কয়েকেজন বাংলাদেশে থেকেই এ কাজ করছে বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের সারা দেশে সব সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হেলথ কার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই উদ্বোধন কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় অভ্যুত্থানে আহত দুজন শিক্ষার্থীর হাতে হেলথ কার্ড তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
গণ-অভ্যুত্থানের এই দুই যোদ্ধা হলেন নরসিংদী ইউনাইটেড কলেজের শিক্ষার্থী ইফাত হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমু।
গত বছরের ১৯ জুলাই আন্দোলনের সময় নরসিংদীতে পুলিশের গুলিতে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান ইফাত। তিনি এখনো এক চোখে দেখতে পান না। অন্যদিকে ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত ইসরাত বর্তমানে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন। তাদের দুজনের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসাসেবা ও অন্যান্য বিষয়ে খোঁজ নেন প্রধান উপদেষ্টা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট জেলায় হেলথ কার্ড বিতরণ করা হবে। এ সময় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর খায়ের আহমেদ চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টাকে চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ১০৭৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৯ জনের দুই চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৪৫০ জনের এক চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
’
তিনি জানান, চোখের ইনজুরির জন্য প্রায় ৬৫০টি অপারেশন করা হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে তিন শর বেশি রেটিনা সার্জারি হয়। চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বাইরে দুটো হাসপাতালে ৬০ জন রোগীর অপারেশন হয়েছে। কোনো কোনো রোগীর তৃতীয় ধাপেও অপারেশন প্রয়োজন পড়ছে বলে জানান তিনি।
এখন পর্যন্ত চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ৬৫ জন রোগীর চোখ ভালো হয়েছে উল্লেখ করে পরিচালক আরো জানান, এখন পর্যন্ত চীন, ফ্রান্স, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিকিৎসকরা চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেছেন এবং যে প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাতে সন্তোষ জানিয়েছেন।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক ড. মুহাম্মদ আবুল কেনান প্রধান উপদেষ্টাকে তার হাসপাতালের চিকিৎসার অগ্রগতি জানিয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত তাদের হাসপাতালে ২১ জন রোগীর হাত অথবা পা কেটে ফেলতে হয়েছে। কয়েকজন রোগীকে বিদেশে নেওয়ার জন্য বাছাই করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগীই ধীরে ধীরে সুস্থ হবে এবং তাদের কেউ মৃত্যু ঝুঁকিতে নেই।
হেলথ কার্ডের উদ্বোধন ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই হেলথ কার্ড থাকার অর্থ হলো এক বছর পরে হোক, দুই বছর পরে হোক যেকোনো সময় দেশের যেকোনো সরকারি হাসপাতালে কার্ডধারীরা চিকিৎসা পাবেন। এই কার্ড সব সময়ই থাকবে।’