ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেছেন, মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশুটির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে তার চিকিৎসার জন্য ৪ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
শনিবার (৮ মার্চ) বেলা পৌনে ১২টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
আসাদুজ্জামান বলেন, শিশুটির পরিস্থিতি অবনতির দিকে। তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।
চিকিৎসকেরা শিশুটির ব্যাপারে খুব আশাবাদী নন জানিয়ে ঢামেক হাসপাতালের এই পরিচালক বলেন, মেডিকেল বোর্ড বসে শিশুটির চিকিৎসার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
ভুক্তভোগী শিশুর চিকিৎসা ফ্রি করা হবে বলেও এ সময় জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান।
এর আগে, শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢামেকের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) চিকিৎসাধীন শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিশুর মামাতো ভাই সুজন বলেন, এতটুকু একটা শিশুর সঙ্গে এরকম বর্বর আচরণ হবে, তা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। আমার ছোট বোনটি এই জানুয়ারি মাসে তৃতীয় শ্রেণিতে উঠেছিল। এরই মধ্যে সব এলোমেলো করে দিল ওই পাষন্ড। আমরা আগে যদি জানতাম বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে, তাহলে কখনই তাকে সেখানে বাড়িতে যেতে দিতাম না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পরিবারের কাউকেই আমার ছোট বোনের সঙ্গে বেশি দেখা করতে দিচ্ছেন না দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। তারা ভেতর থেকে এসে আমাদেরকে যা জানাচ্ছেন, আমরা তাই জানতে পারছি।
তার আগে, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতের দিকে গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে ঢামেকে আনা হয়। পরে শিশুটিকে হাসপাতালের পিআইসিইউতে নেওয়া হয়।
সে সময় শিশুর চাচা বলেন, আমার ভাতিজি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। শনিবার নিজ বাড়ি শ্রীপুর থেকে সে মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বড় বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া তাকে একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করে।
তিনি আরও বলেন, মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর গুরুতর অবস্থায় ঢামেকে আনা হয়।
এ বিষয়ে মাগুরা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম শুক্রবার (৭ মার্চ) গণমাধ্যমকে বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় সন্দেহভাজন ভুক্তভোগী শিশুটির বোনজামাই মো. সজিব শেখ (১৮) ও তার বাবা হিটু মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে পুলিশ এ বিষয়ে তৎপর বলেই অভিযুক্তদের আটক করেছে।